বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর করতে ওয়াসা’র উদ্যোগ
নাঃগঞ্জ মহানগরীতে বসছে নতুন পাম্প
তৌকির আহমেদ :
প্রকাশ: ০০:৫৭, ৪ মে ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে বিশুদ্ধ পানির সংকট কাটাতে নাসিক এর পক্ষ থেকে ওয়াসা নতুন কিছু উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। নগরীতে নতুন করে পানির পাম্প বসানো হবে। কিছু এলাকার পাইপলাইন সংস্কারও হতে পারে। এডিবি’র সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে ওয়াসা সংস্কার কাজ করতে যাচ্ছে। ফলে আগামী দু এক মাসের মধ্যে নগরীর পানি সংকট থাকবেনা বলে আশা করেছেন নাসিক এর প্রশাসক এ এইচ এম কামরুজ্জামান। নগরীর পানি সংকট নিয়ে নগরভবনে ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে প্রশাসক কয়েক দফা মিটিং করেছেন। মিটিংয়ে যে সকল এলাকার সমস্যা উঠে এসেছে সে সকল এলাকায় পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ওয়াসার নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের কয়েকজন প্রকৌশলী জানান, নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে প্রতি বৎসর ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নেমে যাচ্ছে। যার দরুন ওয়াসার পুরনো পাম্পগুলো নগরীতে কম পানি সরবারহ করছে। এতে করে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। ওয়াসার বিল দিতে গেলে গ্রাহকরা তাদের দুর্ভোগের কথা জানায়। যে সকল এলাকার পাইপলাইন নানা কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সে সকল এলাকার মানুষ একটু ঘোলাটে পানির স্যাম্পল জমা দিত। এসব নিয়ে ওয়াসার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনেক আলোচনা করেছেন।
ওয়াসার কর্মচারীরা জানায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার পাঠানতলি, হাজীগঞ্জ, তল্লা, এনায়েতনগর, ঢাকেশ^রী, চৌধুরীবাড়ি, গোদনাইল ও আশপাশের ওয়াসার গ্রাহকরাতো মারমুখি। পানির বিল দিতে গেলেই ওই সকল এলাকার ওয়াসার গ্রাহকরা তেড়ে আসে। অনেক বাড়িওয়ালা বিলিং কর্মকর্তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে মারতে উদ্যত হয়। এ বছর এনায়েতনগরে এমন দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়ানোর আগেই ওই বাড়ির মালিক ক্ষমা চেয়েছেন।
ময়লা পানির স্যাম্পল সম্পর্কে কয়েকজন কর্মচারী তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন,‘আমরা একজন গ্রাহকের বাড়িতে গেলেই বাড়ি মালিক আমাদেরকে অনেক কথা শুনিয়ে দেন। পানির বিল দিতে চান না। বকেয়া বিল পরিশোধের কথা বললে তারা ক্ষেপে গিয়ে আমাদেরকে মারতে তেড়ে আসেন। কখনো বলেন তোদেরকে বেঁধে রাখবো। এরপর বোতলে ময়লা পানি ভরে আমাদেরকে দেয়। বলে এই পানি অফিসে জমা দিবি। এমন ময়লা পানি আসলে বিল দিব কি কারণে’ ?
এদিকে, ক্রমশই নিচে নেমে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের ভূগর্ভের পানির স্তর। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, এক বছরে ১৩ ফুট গভীরে নেমেছে সুপেয় পানির স্তর, ৯৯ শতাংশ পানি উত্তলণ করছে ডাইং কারখানা । ভূগর্ভে পানির নাগাল না পাওয়ায় বিকল হচ্ছে পানির মটর। দুই যুগ পর ৫০০ ফুট গভীরেও সুপেয় পানি না পাওয়ার শঙ্কা। উপরি ভাগের পানি ব্যবহারে জোর দিতে হবে। সুপেয় পানির স্তর সবচেয়ে বেশি নিচে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নে। ২৩০ ফুট গভীরে গিয়ে ওই অঞ্চলে মিলছে সুপেয় পানির স্তর। বছর ঘুরলেই পানির স্তর নিচে নেমে ২৪০ ফুটে গিয়ে ঠেকবে।