আ’লীগের মেগা প্রকল্প ক্ষতির কারণ : রফিউর রাব্বি

‘কদমরসুলে’ শহরে ভয়াবহ ভোগান্তি !

বাংলাবাজার বার্তা ডেস্ক :

প্রকাশ: ০১:০২, ৪ মে ২০২৫

‘কদমরসুলে’ শহরে ভয়াবহ ভোগান্তি !

কদমরসুল সেতুর পশ্চিম অংশের মুখটি শহরে ভয়াবহ ভোগান্তির কারণ হবে। বিশেষজ্ঞদের সাথে সাথে নাগরিক সমাজও এই বিষয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ফোরামে এই সেতুর বিষয়ে তাদের মতামতও তুলে ধরছেন। এই প্রকল্পটি নিয়ে গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল।

এই সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বহু প্রকল্প, মেগা-প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যা, কেবল মাত্র নিজেদের ব্যক্তি বিশেষের অর্থ লুটপাটের উদ্দেশ্যে গ্রহণ করা হয়েছে বলে পরবর্তীতে প্রমাণ হয়েছে। সে সব প্রকল্প বিভিন্ন জায়গায় উপকারের চেয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে।

শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়কে সংযুক্ত করার প্রয়োজনে নদীর উপর কদম রসুলসেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতু নির্মাণের সংবাদটি আমাদেরকে আনন্দিত করেছে। এই প্রকল্পটি ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদিত হয়। এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালে। এর মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এর প্রকল্প ব্যয় ৭ শ’ ৩৫ কোটি টাকা। সেতুটির মূল দৈর্ঘ ৩৮০ মিটার, প্রশস্ত ১২ দশমিক ৮০ মিটার। সংযোগ সড়ক ১৩৭৯ মিটার। সেতুটি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) যৌথভাবে নির্মাণ করবে।

রফিউর রাব্বী  বলেন, সে রকমই একটি প্রকল্প নারায়ণগঞ্জে কদম রসুল সেতুটির নকশায় দেখা যায়, পশ্চিমাংশের মুখটি শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক ফলপট্টি এলাকায় নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে এসে নেমেছে। যা নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য একটি ভয়াবহ দুর্ভোগের কারণ হবে। আমরা অতি দ্রুত যথাযথ সমীক্ষার মাধ্যমে এই ত্রুটি সমাধান করে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির পশ্চিমাংশের মুখটি পুনঃনির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি।

গতকাল শনিবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রফিউর রাব্বী আরো বলেন, এমনিতে শহরের এক নম্বর রেল গেট থেকে পুরো সিরাজ উদদ্দৌলা সড়কটিতে সব সময় অস্বাভাবিক ট্র্যফিক জ্যাম থাকে। এখানে শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় স্কুল নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল, পাশে নারায়ণগঞ্জ কলেজ, এর সাথে দিগুবাবু বাজারে প্রদেশের মুখ, এইটি শহরের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটের সংযোগ সড়ক, সর্বপরি দেশের বৃহত্তর রঙ ও সুতার বাজার টানবাজারে প্রবেশের এইটি একটি প্রধানতম সড়ক হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত যেমনি ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে, আবার এর সাথেই রেল ক্রসিং থাকায় বিভিন্ন সময় এখানে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, এমনি একটি ব্যস্ততম সড়কে কদম রসুল সেতুর মুখ যদি যুক্ত হয় তা হলে এই সেতু থেকে যানবাহন সড়কে নামার ক্ষেত্রে যেমনি বড় ধরণের সংকটে পড়বে, অন্যদিকে এই পুরো এলাকাটিই সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে উঠবে। এত বড় সেতুর নকশা তৈরির ক্ষেত্রে নগরের এই বাস্তবতা ও সংকটটি গভীর ভাবে বিবেচনায় নেয়া উচিত ছিল বলে আমরা মনে করি। এই প্রকল্পে যথাযথ সমীক্ষারক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। অপরিকল্পিত উন্নয়ন জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোন সুফল বয়ে আনে না। যেনতেন ভাবে প্রকল্প সম্পন্ন করে নারায়ণগঞ্জের মানুষের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি করার কোন উদ্যোগ নারায়ণগঞ্জবাসী মেনে নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন