রাস্তায় বৃষ্টির পানি ও কাদা, দিনভর থেমে থেমে যানজট
হকারদের জন্য শহরজুড়ে নৈরাজ্য
বাংলাবাজার বার্তা ডেস্ক :
প্রকাশ: ২১:১০, ৩ জুন ২০২৫ | আপডেট: ০০:২৩, ৪ জুন ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ শহরের রাস্তায় হেঁটে চলা এখন যেন এক দুর্বিষহ যুদ্ধ। কোথাও হাঁটু সমান কাদা-পানি, কোথাও আবার যানজট। শহরের ফুটপাত দখলে হকারদের রাজত্ব, মাঝখানে মাত্র একহাত ফাঁকা জায়গা। ওইটুকু পথেই ঠেলাঠেলি করে পার হতে হচ্ছে পথচারীদের। এক সময় ড্রেনেজ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল স্বস্তির বার্তা নিয়ে।
কিন্তু সংস্কারের কাজ শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টি শুরু হওয়ায় উল্টো দুঃখ বাড়িয়েছে শহরবাসীর। কাদায় ভরে গেছে অধিকাংশ রাস্তা, খোঁড়াখুঁড়িতে তৈরি হয়েছে গর্ত। তার ওপর ফুটপাত দখল করে বসেছে শত শত হকার। ফলে রাস্তায় হাঁটা তো দূরের কথা, কোনো দিকেই চোখ ফেরানোর সুযোগ নেই।
সকাল থেকে রাত—পুরোদিন জুড়ে যানজট লেগেই থাকে। ঈদের কেনাকাটায় শহরমুখি মানুষের ঢল শুরু হলেও স্বস্তির কোনো দেখা নেই। বৃষ্টি হলে সেই যানজট আরও ভয়াবহ আকার নেয়। ফতুল্লার বাসিন্দা কলেজছাত্রী তাসনুভা আক্তার বলেন, আমার ক্লাস আছে সকাল ১০টায়। বের হই ৮টায়, তবু সময়মতো পৌঁছাতে পারি না। গাড়ি চলে না, হাঁটার জায়গাও নেই। ফুটপাত পুরোটাই হকারদের দখলে।”
শহরের চাষাঢ়া থেকে ডিআইটি পর্যন্ত রাস্তা এখন যেন অস্থায়ী ঈদ মার্কেট। কাঁচামাল, জামাকাপড়, খেলনা—সবই পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হলো, এই মার্কেটের কোনো নিয়মকানুন নেই। হকারদের কেউ কিছু বললেই বেঁকে বসছে। অভিযোগ উঠেছে, নতুন করে গড়ে ওঠা একাধিক হকার নেতা ও তাদের পেছনে থাকা রাজনৈতিক চাঁদাবাজরা এসব নিয়ন্ত্রণ করছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন একসময় সক্রিয় ছিল। ঈদের আগে শহর পরিষ্কার করতে অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু এখন যেন সব থমকে গেছে। প্রশাসনের অনুপস্থিতিতে হকাররা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
চাষাঢ়া এলাকার ব্যবসায়ী মো. মাহবুব বলেন, আমাদের দোকানে ক্রেতা কম, কিন্তু সামনে রাস্তার ওপর হকার বসে আছে। মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়েই কেনাকাটা করে। অথচ আমরা ভাড়াও দেই, ট্যাক্সও দেই। এখন হকাররাই বেশি সুবিধা পাচ্ছে।”