এ বছর প্রতি পিস চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১১৫০ টাকা
নাঃগঞ্জে চামড়ার টার্গেট লক্ষাধিক
বাংলাবাজার বার্তা ডেস্ক :
প্রকাশ: ২৩:২২, ৩০ মে ২০২৫

এবার নারায়ণগঞ্জে চামড়ার বাজার ভাল যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। সরকার চামড়ার দাম বাড়িয়েছে বলেই চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান মতে এবার কোরবানির চামড়া উৎপাদনের টার্গেট ১ লাখের কম বলা হলেও নারায়ণগঞ্জের চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন চামড়া উৎপাদনের টার্গেট অবশ্যই লাখের ঘর ছাড়িয়ে যাবে। চামড়া ব্যবসায়ীরা আরো বলছেন, লবনের সরবারহ ও ন্যায্য দাম থাকলে চামড়া সংরক্ষণে কোন সমস্যা হবেনা। গতবারের তুলনায় এবার (২০২৫) নারায়ণগঞ্জে বেড়েছে কোরবানির পশুর চাহিদা। গতবার নারায়ণগঞ্জে মোট গরু কোরবানি হয় ১ লাখ ৬৬ হাজার । এবারের চাহিদাও এরকমই হবে।
প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে ৯৯ হাজার ২৫২ টি। এদিকে, এই মুহূর্তে জেলায় কোরবানির জন্য ৮৬ হাজার ৪২৬টি গরু প্রস্তুত রয়েছে। এ পশু গুলোর মধ্যে রয়েছে ষাড় ৪৮ হাজার ২৭৩টি, বলদ ৬ হাজার ৪৬৫ টি, মহিষ ৯১০টি, ছাগল ১০ হাজার ৪৪০ টি, ভেড়া ৩৩৮৪ টি, অন্যান্য পশু ১৬১টি। চাহিদার তুলনায় ১২ হাজার ৮২৬ টি পশুর ঘাটতি আছে। তবে আগামী কয়েকদিনে ঘাটতির পরিমাণ কমে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাণীসম্পদ বিভাগ। জেলার পাঁচটি উপজেলার ছোট-বড় মিলিয়ে সাড়ে চার হাজার খামার গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত। ইতিমধ্যে অনেক খামারে পশু বেচাকেনা শুরু হয়ে গেছে।
২০২৪ সালে দাম কিছুটা বাড়ায় এ বছর (২০২৫) আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, গতবছর ঢাকার বাইরে নারায়ণগঞ্জে চামড়ার দাম সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। আশাকরি এবার লোকসান কাটিয়ে কিছুটা লাভের মুখ দেখা যাবে। তবে মৌসুমী চামড়া বিক্রেতাদের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। ওরাই বাজারটা নষ্ট করে দেয়।
গত ২৬ মে পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। এ বছর লবণযুক্ত প্রতি পিস গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ঢাকায় এই দাম হবে ১ হাজার ৩৫০ টাকা। এ বছর প্রতি বর্গফুট চামড়ার দামের পাশাপাশি ছোট গরুর আয়তন হিসাবে সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। তবে বড় গরুর চামড়ার দাম চাহিদা ও জোগান অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা নির্ধারণ করতে পারবেন, সে সুযোগও রাখা হয়েছে।
সচিবালয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন এসব তথ্য জানান। এদিকে এ বছর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকায় ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, ঢাকার বাইরে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত খাসির চামড়া সারা দেশে ২২ থেকে ২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এই দুই ধরনের চামড়ার দাম বর্গফুটে দুই টাকা বেড়েছে।
জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মান্নান মিয়া বলেন, সারা বছর গরু ও অন্যান্য পশু কিভাবে পালন করা হবে, এ নিয়ে খামারিদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গরু মোটাতাজাকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রাকৃতিক নিয়মে গরু মোটাতাজা করছে এ জেলার খামারিরা। খামারিরা খড়, গম ও ডালের ভূষি, ঘাস, খৈইল, কুড়া খাইয়ে পশু পালন করেছে ।
তিনি আরও বলেন, জেলায় চাহিদার তুলনায় ঘাটতি পশুর সংখ্যা কিন্তু আগামী কয়েকদিনে আরো কমতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। কিন্তু ঢাকার কাছাকাছি জেলা হওয়ায় অধিক লাভের আশায় সিরাজগঞ্জ পাবনা ও উত্তরাঞ্চল থেকে প্রতি বছরের ন্যায় গরু আসায় এই জেলায় পশুর ঘাটতি থাকে না।এছাড়া বাজার স্থিতিশীল থাকলে আশাকরি খামারিরা লাভবান হবেন। চামড়ার মূল্য সঠিক পাওয়া গেলে খামারিরা আরো বেশি লাভবান হবে।