নাঃগঞ্জে পশু বিক্রির টার্গেট ৫০০ কোটি টাকা

আহমেদ তৌফিক :

প্রকাশ: ২২:৫৫, ২৩ মে ২০২৫ | আপডেট: ১২:৪৯, ২৬ মে ২০২৫

নাঃগঞ্জে পশু বিক্রির টার্গেট ৫০০ কোটি টাকা

শেষ মূহুর্তে সীমান্ত এলাকা থেকে গরু চলে আসে। তাই কোন বছরই নারায়ণগঞ্জ জেলায় কোরবানির পশুর ঘাটতি হয়না। খামারিরা প্রস্তুত। এরই মধ্যে অনলাইন খামারে গরু কেনাবেচা শুরু হয়ে গেছে। এ বছর নারায়ণগঞ্জে ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা হবে বলে আশা করছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। 

প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে ৯৯ হাজার ২৫২ টি। এদিকে, এই মুহূর্তে জেলায় কোরবানির জন্য ৮৬ হাজার ৪২৬টি গরু প্রস্তুত রয়েছে। এ পশু গুলোর মধ্যে রয়েছে ষাড় ৪৮ হাজার ২৭৩টি, বলদ ৬ হাজার ৪৬৫ টি, মহিষ ৯১০টি, ছাগল ১০ হাজার ৪৪০ টি, ভেড়া ৩৩৮৪ টি, অন্যান্য পশু ১৬১টি। চাহিদার তুলনায় ১২ হাজার ৮২৬ টি পশুর ঘাটতি আছে।

তবে আগামী কয়েকদিনে ঘাটতির পরিমাণ কমে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাণীসম্পদ বিভাগ। জেলার পাঁচটি উপজেলার ছোট-বড় মিলিয়ে সাড়ে চার হাজার খামার গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত। ইতিমধ্যে অনেক খামারে পশু বেচাকেনা শুরু হয়ে গেছে।

তবে সরকারি এই পরিসংখ্যানের সাথে একমত নন স্থানীয় খামারী ও গবাদি পশুর মহাজনরা। তাদের মতে, শেষ পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ, চৌহালি ও পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির পশু আসতে শুরু করলে নারায়ণগঞ্জে কোরবানির পশুর সরবারহ ও চাহিদা দু’টোই বেড়ে যায়। সেই হিসেবে এ বছর নারায়ণগঞ্জ জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা দেড় লাখের উপরেই থাকবে। দেড়লাখের নিচে নামবেনা।

গেল বছর নারায়ণগঞ্জে মোট কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল ১ লাখ ৬৬ হাজার ৮০৩ টি। এর বিপরীতে জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার খামারে (যার মধ্যে ৪৩২৭ জন রেজিস্টার্ড ও বাকিগুলো মৌসুমি খামারি) ৪৩ হাজার ৬৬০টি ছাগল, ১ হাজার ৩৩৩টি ভেড়া ও ২৫ হাজার ৯৮৯টি গরু কোরবানির উপযোগী রয়েছে। কোরবানির জন্য চাহিদার বাকি পশুগুলো দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অন্যান্য বছরের মতো হাটগুলোয় আসবে।

২০২৪ সালে দাম কিছুটা বাড়ায় এ বছর (২০২৫) আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, গতবছর ঢাকার বাইরে নারায়ণগঞ্জে চামড়ার দাম সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। আশাকরি এবার লোকসান কাটিয়ে কিছুটা লাভের মুখ দেখা যাবে। তবে মৌসুমী চামড়া বিক্রেতাদের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। ওরাই বাজারটা নষ্ট করে দেয়।

দ্বিগুবাবুরবাজারে মাংসপট্টিতে এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, ২০২০ সালে জেলায় এক লাখ দশ হাজার পিস পশুর চামড়া সংগৃহীত হয়েছিল। চামড়ার কারবারে লোকসান হয়নি।  সেবার চামড়ার দাম উঠেছিল সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা।

তবে পরের বছর ২০২১ সালে চামড়ায় দাম পাইনি। ২০২২ সালেও চামড়ায় লোকসান হয়েছে। ২০২৩ সালেও কোনমতে লোকসান ঠেকানো গেছে। ২০২৪ সাল চামড়ার বাজার কেমন যাবে কে জানে। তবে দামটা একটু বাড়ায় চামড়া ব্যবসায়ীরা আশাবাদি।

নারায়ণগঞ্জ জেলায় ২০২৪ সালে কোরবানির চামড়ার টার্গেট ছিল দেড়লাখ পিস।  জেলায় পশু কোরবানির টার্গেট ছিল ১ লাখ ৬৬ হাজার ৮০৩। আপাতত  জেলার খামারগুলোতে চাহিদার অর্ধেকেরও কম অর্থাৎ ৭১ হাজার ২৩৫টি পশু আছে।

গতবারের তুলনায় এবার (২০২৫) নারায়ণগঞ্জে বেড়েছে কোরবানির পশুর চাহিদা। গতবার নারায়ণগঞ্জে মোট গরু কোরবানি হয় ১ লাখ ৬৬ হাজার । এবারের চাহিদাও এরকমই হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলায় গত ২০২৩ সাল কোরবানির টার্গেট ছিল ১ লাখ ১৮ ‘শ । চামড়া সংগ্রহের টার্গেটও ছিল ১ লাখ ১৮ ‘শ এর কাছাকাছি। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় কোরবানির টার্গেট ২০ হাজার।

বন্দর উপজেলায় ২০ হাজার। রূপগঞ্জ উপজেলায় ২০ হাজার ৫০ টি, আড়াইহাজার উপজেলায় ২০ হাজার এবং সোনারগাঁ উপজেলায় কোরবানির টার্গেট ২০ হাজার।

বিশেষায়িত খামার ছাড়াও সাধারণ খামার ও কৃষকরা বাড়িতে গবাদিপশু পালন করে কোরবানির জন্য তৈরী করছে।  সে বছরের চামড়া সংগ্রহের টার্গেট পূরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা।

 

 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন