আইভীর বাড়িতে পুলিশের অভিযান কেন ? কে দিচ্ছে নির্দেশ ?
বাংলাবাজার বার্তা ডেস্ক :
প্রকাশ: ০২:০২, ৯ মে ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বাসভবনে পুলিশের হঠাৎ অভিযান ঘিরে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। কেন এমন অভিযানে নামলো পুলিশ? কে দিল এই নির্দেশ? কোন মামলায় জড়িত করা হয়েছে সাবেক মেয়রকে?
পুলিশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে—আইভীর সাম্প্রতিক কিছু রাজনৈতিক অবস্থান এবং ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে টানাপোড়েনের বিষয়টি।
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বরাবরই দ্বন্দ্ব বিদ্যমান। একপাশে ছিল শামীম ওসমান ঘনিষ্ঠ একটি বলয়, অন্যপাশে আইভী ও তার অনুসারীরা। নির্বাচনের আগ দিয়ে এই দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়।
সাম্প্রতিক কয়েকটি জনসভায় ডা. আইভী প্রশাসনের কিছু সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়ে ছিলেন। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে সরব হন তিনি।
একাধিক নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ‘একটি গোপন প্রতিবেদনের’ ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হয়। তবে এই গোপন প্রতিবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। কেউ কেউ দাবি করছেন, এটি ছিল "নির্দেশনামূলক তল্লাশি"। কিন্তু কার নির্দেশে?
ঢাকা থেকে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের একটি টিম অভিযানের সময় স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করছিল বলে জানা গেছে। এটাও স্পষ্ট নয়, কোনো ওয়ারেন্ট ছিল কিনা।
এখনো ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ একজন জানান, "উনি অবরুদ্ধ, পুলিশ কিছু বলছে না। তবে তিনি আইন মেনে চলা একজন নাগরিক, এমন আচরণ তার সঙ্গে অন্যায়।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশাসনের এমন তৎপরতা স্থানীয় রাজনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। একজন জনপ্রিয় সাবেক মেয়রের সঙ্গে এমন আচরণ দলীয় ইমেজেও প্রভাব ফেলতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. মাহবুব হোসেন বলেন, “এই অভিযান যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়, তাহলে তা খুবই উদ্বেগজনক। একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনপ্রতিনিধিদের হয়রানি গণআস্থা নষ্ট করে।”
আইভীর বাড়ির সামনে এখনো ভিড় করছেন মানুষ। অনেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। পরিস্থিতি যেন আরও জটিল না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকেও স্বচ্ছতা ও দ্রুত ব্যাখ্যা দিতে হবে।