নাঃগঞ্জ বিআরটিএ অফিসে দুদক
বাংলাবাজার বার্তা ডেস্ক :
প্রকাশ: ০০:৫৮, ৮ মে ২০২৫ | আপডেট: ০২:০২, ৯ মে ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান স্বস্তিদায়ক হলেও, এটি বরফের চূড়া মাত্র—এর নিচে জমে আছে বহু বছরের অনিয়ম, দালালচক্রের রমরমা ব্যবসা এবং সেবাপ্রার্থীদের প্রতি প্রশাসনিক নিষ্ঠুরতা।
সরকারি অফিস মানেই দুর্নীতির অবাধ বিস্তার—এই ধারণা এখন কেবল ধারণা নয়, বাস্তব সত্য। বিআরটিএ, ভূমি অফিস, রেজিস্ট্রি অফিস, এমনকি সরকারি হাসপাতাল—সবখানে যেন অদৃশ্য সিন্ডিকেটের শাসন চলছে। মানুষ সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়, ন্যায্য অধিকার পেতে দিতে হয় ঘুষ, আর এ দালালচক্র সবসময় থাকে 'সিস্টেম'-এর ছায়াতলে নিরাপদে।
দুদকের এ অভিযান অবশ্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এতে কী পরিবর্তন আসবে? একজন দালালকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া, একটি ফাইল জব্দ করা, অফিসপ্রধান অনুপস্থিত থাকার দোহাই দেওয়া—এসব কি স্থায়ী সমাধানের পথ? দুর্নীতি নির্মূল করতে হলে ব্যবস্থা নিতে হবে গোড়ায়। যারা এই সিন্ডিকেটের মূল পরিকল্পনাকারী, যারা পেছনে থেকে এসব দালালচক্রকে পরিচালনা করে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বিআরটিএ-তে ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইল নাড়া যায় না—এ কথা নতুন নয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এসব অনিয়মের সঙ্গে অফিসের অনেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত। যখন অফিসপ্রধান নিজেই বলেন, "আমি উপস্থিত ছিলাম না", তখন জনগণের মনে প্রশ্ন জাগে—দায় এড়াতে কি ইচ্ছাকৃত অনুপস্থিত ছিলেন তিনি?
অভিযান একটি তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ; কিন্তু এই অব্যবস্থা বন্ধে দরকার কাঠামোগত সংস্কার। সেবা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে বাধ্যতামূলক করতে হবে, ঘুষ প্রদান-গ্রহণে জড়িতদের দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিটি অফিসে দৃষ্টান্তমূলক শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে প্রমাণ করতে হবে—সরকারি অফিস জনগণের, দালালের নয়।
দুদক আজ যে আলো জ্বালিয়েছে, তা যেন অকালেই নিভে না যায়। বরং এই অভিযান হোক একটি জেগে ওঠার শুরু।