‘ভিন্নতা নয়, সম্ভাবনার প্রতীক অটিজম’

নাঃগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মানবিকতাবোধে সবার চোখে জল

বাংলাবাজার বার্তা ডেস্ক :

প্রকাশ: ২৩:৪০, ২২ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ০১:০৯, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

নাঃগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মানবিকতাবোধে সবার চোখে জল

অটিজমকে চমৎকারভাবে বক্তব্যে ফুটিয়ে তুলে সকলের চোখের পানি ঝরালেন তিনি।  অটিজমকে সম্ভাবনার প্রতীক বলে মানবিক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার বক্তব্যে ১৮তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে নারায়ণগঞ্জ জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সহানুভূতির এক উষ্ণ বার্তা। ‘তারা আলাদা, তবে আমাদেরই মতো’-এই চেতনায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি, আলোচনা সভা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠান।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। তার মানবিক ভাষণে উঠে আসে বিশেষ শিশুদের প্রতি সমাজের দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা।“তারা কোনভাবেই সমাজের বোঝা নয়,” বললেন জেলা প্রশাসক। “তাদের মাঝেও আছে সম্ভাবনার আলো। আমাদের দায়িত্ব তাদের পাশে দাঁড়ানো, সাহচর্য ও সহমর্মিতায় তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করে দেওয়া।”

ডিসি আরও বলেন, “সূর্যের যেমন তাপ না থাকলে তার মূল্য নেই, তেমনি মানবতাহীন সমাজও মূল্যহীন। তাই মানবতা দিয়েই বদল আনতে হবে দৃষ্টিভঙ্গির।” র‌্যালিটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন) মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী, সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আসাদুজ্জামান সরদারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন এনজিও, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অটিজম পরিবারের সদস্যরা।

আলোচনা সভা শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয় ১০ জন অটিজম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাঝে। জেলা প্রশাসক নিজ হাতে উপকারভোগীদের হাতে তুলে দেন এই সহায়ক যন্ত্রটি। উপস্থিত অনেকেই চোখের জল লুকাতে পারেননি সে সময়।

“এই সন্তানরা সমাজের সম্পদ। যদি আমরা পাশে দাঁড়াই, সঠিক সুযোগ দিইতবে তারাও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে,” বলেন জেলা প্রশাসক। তিনি সমাজের বিত্তবান ও সচেতন মানুষদের অটিজম আক্রান্ত শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।

এই কর্মসূচি শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং একটি মানবিক বার্তা—ভিন্নতাই যে সৌন্দর্য, আর সহানুভূতিই যে প্রকৃত উন্নয়নের মূল ভিত্তি।

সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সমাজের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যারা আমাদের সন্তান রয়েছে তারা আমাদের বোঝা না। তাদের অনেকের মধ্যে অনেক বিষয় অনেক বেশি প্রতিভা রয়েছে। আমরা যদি তাদের পাশে থাকি এবং তাদের পাশে দাঁড়াই তাহলে তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে আমাদের বাংলাদেশকে অনেক কন্টিডর করতে পারে বলে আমাদের কাছে মনে হয়। সুতরাং আমরা তাদের পাশে থাকতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানি এদেশে যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সন্তান রয়েছে তাদেরকে লালন পালন করা ওই পরিবারের মাতা পিতার জন্য কতটা কষ্টকর। যাদের আছে তারাই শুধু এটা অনুভব করতে পারে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন আমরা তাদের পাশে আছি।

আমরা চাই সমাজের যারা বিত্তবান আছে এবং যাদের সামর্থ্য আছে তাদেরকে বলব এই প্রতিবন্ধী এ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সন্তান আছে তারা আমাদের সমাজেরই অংশ। আমরা সকলে মিলে আসুন আমরা তাদের পাশে দাঁড়াই এবং আমরা সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়ি।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন